ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ , ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকার সংস্কার কমিশন করলেও নদীর ক্ষেত্রে প্রতিফলন নেই-আনু মুহাম্মদ বাড্ডায় কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষে নিহত ১ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুল খরচেও কমানো যাচ্ছে না নানামুখী আতঙ্ক রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা সেই শিশু আছিয়া না ফেরার দেশে ধর্ষণে আতঙ্ক -উদ্বেগ ভারতকে অযাচিত বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে বলল ঢাকা প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরে যাচ্ছেন ২৬ মার্চ সালমান এফ রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা খরায় পুড়ছে চা-বাগান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা ইফতারিতে দই-চিড়ার জাদু একরাতে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা এলাকায় আতঙ্ক স্বাভাবিক নিত্যপণ্যের বাজার, সংকট সয়াবিনে মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ধর্ষণ ছেঁউড়িয়ায় শুরু লালন স্মরণোৎসব দোহাজারীতে বাসচাপায় ৩ জন নিহত হেনস্তার পর ছাত্রীকে ফেলে দিলো দুর্বৃত্তরা ৫৬০ মডেল মসজিদ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ভ্যাট দেয় না বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরনের কাপড় টিভি ফ্রিজ খাট টাকা সব পুড়ে শেষ বস্তিতে আগুন

যক্ষ্মায় মৃত্যু কমানোর লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে দেশ

  • আপলোড সময় : ২০-০৫-২০২৪ ০৯:৪৮:১৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২১-০৫-২০২৪ ০১:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন
যক্ষ্মায় মৃত্যু কমানোর লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে দেশ যক্ষ্মায় মৃত্যু কমানোর লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে দেশ

সংক্রমক রোগ যক্ষ্মায় মৃত্যু কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশজাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কৌশলপত্র অনুযায়ী, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মায় মৃত্যু ৭৫ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে২০১৫ সালে যক্ষ্মায় মৃত্যু ছিল ৭৩ হাজার২০২৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মা সংক্রমণ ৫০ শতাংশ (২০১৫ সালের তুলনায়) কমাতে হবেতবে এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশপাশাপাশি, চিকিৎসায় অসচেতনতা ও অর্ধেক পথে ওষুধ সেবন ছেড়ে দেয়ায় বাড়ছে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মাচিকিৎসকরা বলছেন, যক্ষ্মার জীবাণু শুধু ফুসফুস নয়, মস্তিষ্ক, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যে কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমণ ঘটাতে পারেচিকিৎসকদের মতে, যত বেশি মাত্রায় রোগী শনাক্ত করা যাবে, এ রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ তত সহজ হবেতবে এ ক্ষেত্রেও এখনো অনেক পিছিয়ে দেশবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৭৭ হাজার মানুষতবে বাংলাদেশে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী দেশে শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ এক হাজার ৫৬৪ জনডব্লিউএইচওর তথ্য ও দেশের টিবি শনাক্তের তথ্য অনুযায়ী, ৮০ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় এবং শনাক্তের বাইরে আছে আরও প্রায় ২০ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৭৭ হাজার মানুষতবে বাংলাদেশে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী দেশে শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ এক হাজার ৫৬৪ জনডব্লিউএইচওর তথ্য ও দেশের টিবি শনাক্তের তথ্য অনুযায়ী, ৮০ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় এবং শনাক্তের বাইরে আছে আরও প্রায় ২০ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীএর আগে ২০২২ সালে বাংলাদেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন ৩ লাখ ৭৯ হাজার মানুষতবে শনাক্ত ছিল ২ লাখ ৬২ হাজার ৭৩১ জনডব্লিউএইচওর তথ্য এবং যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী দেশে, ৬৯ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় এবং শনাক্তের বাইরে ছিল আরও প্রায় ৩১ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীওই বছর শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৫৪ শতাংশ ও নারীর সংখ্যা ৪২ শতাংশবাকি ৪ শতাংশ শিশু২০২১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন মানদণ্ড বিবেচনা করে বাংলাদেশে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৫ হাজার বলে ধারণা দেয়তাদের মধ্যে ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৬১ জন শনাক্ত হনডব্লিউএইচওর তথ্য এবং যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী সে বছর দেশে, ৮২ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় এবং শনাক্তের বাইরে ছিল আরও প্রায় ১৮ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীএদিকে রোগী শনাক্ত করার বিষয়ে অগ্রগতি হলেও ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীশনাক্তে এখনো অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেশে প্রতিবছর ৪ হাজার ৯০০র মতো রোগী যক্ষ্মার ওষুধ প্রতিরোধীহয়ে ওঠেনকিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে দেশে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করা গেছে ২ হাজার ৭২৯ জনযাতে দেখা যায়, মোট রোগীর প্রায় ৫৫ শতাংশ এখনো শনাক্তের বাইরে রয়ে গেছেঢাকার জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সিনিয়র পালমোনোলজিস্ট ডা. কাজী সাইফুদ্দীন বেননূর বলেন, যক্ষ্মা ধরা পড়লে চিকিৎসায় যেসব ওষুধ দেওয়া হয় তার মধ্যে রিফামপিসিন এবং আইসোনিয়াজিড কিছুকিছু রোগীর ক্ষেত্রে অকার্যকর হয়ে গেছেমানুষের অসচেতনতায় ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মাহয়এটি মানবসৃষ্টতাই সচেতনতায় এ সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভবযক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বির সিনিয়র সায়েন্টিস্ট সায়েরা বানু বলেন, যক্ষ্মারোগী এখন পর্যন্ত একটি ধারায় আছেযেখানে একটা সময়ে শনাক্তের হার অনেক কম ছিল, তা এখন প্রায় ৮০ শতাংশতবে দেশে এখনো যক্ষ্মা রোগী অনেক বেশিযক্ষ্মা প্রতিরোধ করতে আমাদের ধীরে ধীরে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবেকিন্তু সেটা এখনো পারা যাচ্ছে নাদেশে সক্ষমতা না থাকায় ও প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকায় এটি এখনো খুব বেশি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান সায়রা বানুতিনি বলেন, এ জায়গায় পিছিয়ে থাকাটা ভালো বিষয় নয়এ রোগীদের মাধ্যমে অন্য সাধারণ মানুষও আক্রান্ত হচ্ছেযক্ষ্মা প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের এদেরও শনাক্তের আওতায় নিয়ে আসতে হবেতবে সক্ষমতা আগের তুলনায় ধীরে ধীরে বাড়ছেবর্তমানে আমাদের কাছে জিন এক্সপার্ট মেশিন এসেছেযার মাধ্যমে দুই ঘণ্টার মধ্যে এ ধরনের রোগীকে শনাক্ত করতে পারিবর্তমানে ৬০০-এর মতো জিন এক্সপার্ট মেশিন আছেজাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্যে জানা যায়, দেশের প্রতিটি উপজেলা হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বক্ষব্যাধি ক্লিনিক এবং নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিকসহ সারাদেশে ৮৭১টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগের পরীক্ষা ও চিকিৎসা পাওয়া যায়২০২২ সালে দেশে প্রথম এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর এক্স-রে মেশিনের মাধ্যমে যক্ষ্মা চিকিৎসা শুরু করেছে আইসিডিডিআর,বিবিশ্বের যে কয়েকটি দেশে এআই এক্স-রে মেশিন প্রথম দিকে চালু হয়, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটিগত এক বছর দুই মাসে প্রায় ৬৬ হাজার ৬৭৪ জনকে এর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়যেখানে ২৫০০ জনের মতো যক্ষ্মারোগী শনাক্ত হয়সাধারণত যক্ষ্মা ধরা পড়লে ছয় মাস পূর্ণ মেয়াদে ওষুধ খেতে হয়এ সময় ধারাবাহিকভাবে ওষুধ খাওয়ার কথা থাকলেও অনেকে দুই থেকে তিন মাস পর বন্ধ করে দেনএতে তাদের শরীরে যক্ষ্মার জীবাণুর ওষুধ প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়েএ ছাড়া একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার জীবাণু সংক্রমিত হয়ে সাধারণ একজনকেও আক্রান্ত করতে পারেযক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে যুক্ত ব্যক্তিদের মতে, দেশে যক্ষ্মা মোকাবিলায় রোগীদের দ্রুত শনাক্ত করা প্রয়োজনআর তার সঙ্গে চিহ্নিত রোগীদের কমিউনিটি পর্যায় থেকে ফলোআপ ও সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স